খোঁজ

আলী হোসেন

কীবোর্ডে স্ট্রোকের আওয়াজ। খট্-খট্‌, খট্, খট্-খট্-খট্, খট্-খট্,....। এত জোর যেন কান-মাথা ধরে যায়।! দশ-দশটি কীবোর্ড। চলছে এক সাথে। মাথার সাধ্য কি, না ধরে যায়!। এর মধ্যে ঋদ্ধির স্টোকের জোর, একটু বেশিই। বিগত দশ বছর ধরে চলছে এই কী-আঙ্গুলের ঠোকাঠুকি। তাই গা-সহা হয়ে গেছে সব। ক্রমে গভীর হয়েছে হৃদ্যতা, ঋদ্ধির সাথে কীগুলোর। কিন্তু পাশের জনের সহ্য হবে কেন?
হ্যালো, শুনছেন?
ঋদ্ধি বুঝতে পারেন, ওকেই উদ্দেশ্য করা হচ্ছে।
একটু আস্তে স্ট্রোক দিন না! বাঁ পাশের সিটে বসা ছিপছিপে মেয়েটা বিরক্ত হয়। কীবোর্ডের খট খট আওয়াজ মাইক্রোফোন যেন লুফে নিচ্ছে। তাই সাথির কথার চেয়ে ওটাই বেশি পাচ্ছে পিউ। পিউ সাথির চ্যাট-ফ্রেন্ড। ভয়েজ চ্যাটেই ওরা বেশী স্বাচ্ছন্দ্য।
আস্তে স্ট্রোক দেওয়ার চেষ্টা বরাবরই করে ঋদ্ধিনাথ। কিন্তু কখন যে তা বেড়ে যায়, শত চেস্টা করেও খেয়াল থাকে না। তাই তড়িঘড়ি স্যরি বলে নেয়।

আজও স্যরি বলেছিল। কিন্তু প্রত্যুত্তরে কানে এলো একটা আদ্ভুত টিপ্পনি। ডানপাশ থেকে। ‘বয়স হলে কি হবে, আঙ্কেলের হাতের আর মনের জোর এখনও কমে নি। দেখছেন না, কেমন কচি কচি মেয়েদের সঙ্গে চ্যাট করছেন।
সাথি বুঝে ফেলে, অযাচিত সহযোগিতা। তাই নিরুত্তোর থাকে। শুধু ঘাড় ঘুরিয়ে বাম গালাসি টেনে এক অদ্ভুত মুখভঙ্গি করে। বুঝিয়ে দেয়, প্রয়োজন ছিল না।
ঋদ্ধিনাথও ঘাড় ঘোরায়, দু’পাশটা দেখে নেয়। মুহূর্তে ঠোট দুটো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে ওর। কি যেন ভাবে, তারপর মুখ নামিয়ে পুনরায় কীপ্যাডে আঙুল রাখে। এবার, আরও দ্রুত ছুটতে থাকে আঙুলগুলো, কীগুলোর বুক ছুয়ে যাওয়া খরর-খরর আওয়াজ তুলে। কেন জানি না, আজকাল এই কীগুলোই খুব কাছের হয়ে উঠেছে ওর। এদের ছোঁয়ায় আশার আলো দেখে, আওয়াজে শোনে বাঁচার আশ্বাস। তাই এধরনের কথাগুলোকে পাশ কাটিয়ে যেতে ওর কষ্ট হয় না। হলেও তাকে মনের দখল নিতে দেয় নি কোনদিন। আজও দেবে না ভেবে ছিলো। কিন্তু......?
জানিস বিট্টু, ঋদ্ধির ভাবনায় ছেদ পড়ে, বয়স হলে ভিমরতি হয়। যেমন আমার হয়েছে। ডান পাশে চ্যাটিং-এ বসা বছর বাইশের ছেলেটি এবার উদ্দ্যেশ্য পাল্টে ফেলে। বিধেয় ঠিক রেখে বলে, দেখনা, থামচ-আপ’এর মুদ্রাকে কোল বরাবর উল্টে দেখায়, অল্প বয়সি মেয়ে দেখলেই আমার ইয়েটা যেন টনটন করে ওঠে।
বিট্টু বলে, যা!
হ্যাঁ-রে। দেখ না, আমার চ্যাটরুমে কোন ছেলের ছবি নেই।
ওমা! তুই জানিস না, প্রেমের আবার বয়স হয় নাকি? আর মেয়ে ছাড়া প্রেম? তাও আবার এই বয়সে!
একসঙ্গে হো-হো করে হেসে ওঠে দু’জনে। হাসি থামিয়ে বলে, তা’লে তুই বলছিস, এটা ভিমরতি নয়!
য়ু-হু, প্রেমরতি। শুধু একটু অ-সময়ে।
ঋদ্ধিনাথের হাতের আঙুল গুলো জড়ো হতে শুরু করে। কনিষ্ঠা থেকে পর্যায়ক্রমে; ঘুষির আকারে। তড়িৎ গতিতে উঠে দাঁড়ায় ঋদ্ধি। এবারও কি-একটা ভাবে। তারপর দ্রুত বেরিয়ে পড়ে, কাফে থেকে।
বিট্টু হুড়মুড়িয়ে চেয়ারের দখল নেয় । এত সময় ওর চেয়ার ছিল না। বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়েই চ্যাটের মজা লুঠছিল। লুঠছিল না ছাই, মনে মনে ভাবে, শেয়ার করছিলাম। লম্বা প্রশ্বাস নিয়ে ভাবনাকে টেনে নিয়ে যায়, চ্যাটিং-এ আবার শেয়ার! ভাবা যায়? মোটেই পোষাচ্ছিল না। লুঠের জন্যই তো আসা। নিশার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ন ডিস্কাসশন রয়েছ। ট্রেকিং নিয়ে। আরও কনফিডেনশিয়াল ডিসিশন নেওয়ার কথা আজ। নিশার শরীরের গোপন পাত্রে রাখা মহুয়ার স্বাদ পাবে সে। তাও এই প্রথম। ভাবতেই শরীরে শিহরণ ওঠে। এক অবর্ননীয় আবেশে চোখদুটো বুজে যায়। গতরাতের ঘোরটাই তো এখনও কাটে নি। নিশার শরীরের কতটা গভীরে ঢুকতে পেরেছিল কে জানে? ঠিক মনে করতে পারে না। তলপেটের নিচে টনটনে ব্যাথাটা প্রচণ্ড ঝাকুনিতে ভালোলাগার চরমসীমা ছুঁতেই স্বপ্নের ঘোরটা কেটে গেল। একটা অদ্ভূত ভোট্কা গন্ধের বলয়ে ধনুক-বাঁকা শরীরটা আটকে গেল কিছুক্ষণ। একরাশ অস্বস্তি আর গন্ধটা তো এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে ওকে। আধোঘুমের শরীরী মোচড়, লাভাস্রোতের মত রক্তের দুরন্ত নিম্নগতি, আর প্রচণ্ড ঝাকুনিতে, সে কতটা প্রবেশ করেছিল নিশার মহুলবনের গহিনে, তার প্রামান্যতা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দেহ-মন যেন আনচান করছে সারাক্ষণ। তাই অস্থিরতা সর্বাঙ্গে।
প্রায় আধ ঘন্টারও বেশি হয়ে গেল, নিশা অনলাইনে। কতটা সবুর করা যায়! তাই মাথা খাটানো। যদিও শুরুটা বিট্টুর বন্ধুই করেছিল। নিজে সময়মত ট্রাকে ঢুকতেই কিস্তিমাত।
এই দেখ দেখ, আঙ্কেলের ক্যালি আছে বলতে হয়! মেয়েগুলোর ফিগার দেখ। সব লাউ-ডগার মত স্লিম। কি করে পটালো বলতো?
তার আগে বলতো, তুই ওনার প্রফাইলে ঢুকলি কি করে?
সিম্পল। সান রাইজ হয়েছে, সান সেট তো হয় নি। সামনের কোল বরাবর মাথা নাচিয়ে বিট্টু বলে, টেনশনে আঙ্কেল সাইন-আউট করতে ভুলে গেছে।
দেখ হয় তো... বিট্টুর বন্ধু কোন ব্যাখ্যা দিতে চাইছিল। বিট্টু থামিয়ে দেয়। ও-য়া-ও... করে লাফিয়ে ওঠে। যেন মধ্যাকর্ষন শক্তির মত কিছু আবিস্কার করে ফেলেছে, যার টানে রাজ্যের মেয়েরা ঋদ্ধির চ্যাট রুমে।
সালা চেহারাটা দেখ! বিট্টু ঋদ্ধিনাথের প্রফাইল-ফোটোয় ইশারা করে, যেন ঋষি কাপুর।
তাহলে বলছিস, আঙ্কেলের শুধু হাত আর মনের নয়, মাথার জোরও ঈর্ষা করার মত!
ঠিক তাই। ভেবে চিন্তে একটা লাল্টুস চেহারার ছবি লাগিয়েছেন আঙ্কেল।

বিল্টুরা ছবি বললেও ওটা ঋদ্ধিনাথেরই প্রতিছবি। ইচ্ছা করেই ওই ছবি লাগিয়েছে ঋদ্ধি। অবশ্য বিশেষ উদ্দেশ্য আছে ওর। এবং সেটা ইচ্ছা করেই গোপন রেখেছে। আর না রেখেই বা কি করবে? বললেও কি কেউ বিশ্বাস করবে?
এখনও স্পষ্ট মনে আছে, সবে গ্রাজুয়েশন কম্পিলিট করেছে ও। মাষ্টার্ডে ভর্তি হবে, ছবি চাই। তাই ছবিটা তোলা। তখন সত্যিই হিরোর মত চেহারা ছিল ওর। ঋষিতা তো প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেল। ঋষিতাকে খেপানোর জন্য প্রায়ই বলে, শুধু পড়া তো নয়, যারে বলে হাবুডুবু খাওয়া। মাষ্টার্ড শেষ করার আগেই পিঁড়িতে বসতে হল।
না বসে কি উপায় ছিল? সেকি পীড়াপীড়ি তোমার! শেষমেশ পীড়িতে বসেই পীড়াপীড়ির অবসান।
আমি পীড়াপীড়ি করতাম! অসম্ভব। নিজেকে যৌক্তিক করার চেষ্টা করে, সোনার আংটি আবার বেঁকা! কি, শুনেছ কোনদিন? জবাবের অপেক্ষা না করেই বলে, তবে আমি কেন......।
কে কাকে পীড়াপীড়ি করত, এই বিতর্ক প্রায়ই হত। এখনও হয়। ঋদ্ধিই জিইয়ে রেখেছে। রাখবে নাই বা কেন? এটা দিয়েই তো ঋষিতাকে আবিষ্কার করে নতুন করে। ঋষিতার চেহারার নতুনত্ব একদিন মুগ্ধ করেছিল বটে। কিন্তু সে তো কলেজ লাইফে। এখন এই বিতর্কগুলোই নতুন করে মুগ্ধতার টান তৈরি করে। আর এই টান দিনে দিনে অভিকর্ষজ বল হয়ে উঠেছে দু’জনের মধ্যে।
সে কি খুব সুন্দরী ছিল? বন্ধুদের কেউই তা স্বীকার করে নি। ঋদ্ধিও জোর করে দাবি করে নি কোনদিন। নিদাগ দাঁতের ঈষৎ বড় চেহারা ঋষিতার মুখের অবয়বকে অপার্থিব করে তুলেছিল। অন্তত ওর তো তা-ই মনে হত।
এখন মনে হয় না? মাঝে মাঝেই প্রশ্নটার সামনা সামনি হয় ঋদ্ধিনাথ।
হয় না কি বলেছি? এমন করে উচ্চারন করে ঋদ্ধি, ঋষিতা বুঝে উঠতে পারে না। একবার ভাবে, এর মানে হল ‘হয়ই তো’, অন্যভাবে ভাবলে মানে হয়, ‘হয় না তো। কিন্তু বলেছি কখনও? কিম্বা কষ্ট দিয়েছি তোমাকে, এ নিয়ে?’
আর এমন মনে হলেই বুকটা ভারি হয়ে ওঠে ঋষিতার। নিশ্বাসের চলাচলটা যেন আটকে যায়। ঋদ্ধি জানে, এমন মুহূর্তেই বিতর্কটা ইনহেলার হয়ে ওঠে। নতুন করে ডালপালা গজায় সম্পর্কের। সম্পর্কের এই ডালপালাই একে অপরকে কাছাকাছি আনে, জন্ম নেয় নতুন কোন সম্পর্ক। ঈষিতা, ওদের মেয়ে, এমনই এক সম্পর্কের ফসল। বাধনও।
তুমি একটু সহজ করে কথা বলতে পার না?
পারি তো।
বল না যে?
বলব কেন? পালটা প্রশ্ন করে ঋদ্ধি।
জীবনটা বেশ সহজ হয়ে যেত।
ওই জন্যেই তো বলি না। জীবনটা সহজ হয়ে গেলেই আসে একঘেয়েমি। সম্পর্কের গেরো যায় আলগা হয়ে।
অর্থাৎ তোমার মতে, সম্পর্কের টানাপোড়েনই সম্পর্ককে টেনে নিয়ে যায়?
ঠিক তাই।
আর এই ঠিকঠাক বুঝতে পারাটাই দ্বিতীয়বার অদ্বিতীয় করে তুলেছে ঋষিতাকে। যুক্তিবোধকে কখনই জীবন থেকে বিযুক্ত করে না ও। বিতর্কের সঙ্গে ঝগড়ার মৌলিক পার্থক্য কোথায়? ঋদ্ধিনাথ বলে, বেশ বোঝে। তাই ঝগড়া শব্দটা ওদের জীবন থেকে বাদ। ঝগড়া নেই মানে ঋষিতা। ঝগড়া আছে মানে নিশ্চয়ই অন্য কেউ। এভাবেই জীবনের ধারাপাতকে সূত্রায়িত করেছিল ঋদ্ধি। এভাবেই লিখেছিল স্মৃতিতে। একবারও ভাবে নি, ঝগড়া নেই মানে ঋষিতা নেই, এও হতে পারে।
ভাবে নি, মানে ভাবতে হয় নি। বন্ধুরা, বিশেষ করে মনোজ, প্রায়ই বলত, পারিস কী করে তোরা? আমরা তো হাঁপিয়ে উঠেছি। একই কাঠামো দেখতে দেখতে ঘেন্না ধরে গেছে। ঐ যে, কথায় বলে না ‘ থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড়ি থোড়’। কার ভালো লাগে বলতো? মাঝে মাঝে তো মনে হয়, সালা ডিভোর্স হয়ে যাবে। একটু দম নিয়ে বলে, বাই দ্যা বাই, তোরা আছিস কি করে বলতো? রসায়নটা কী?
রসায়ন জানলেই কি হবে ভাই? প্রয়োগটাই আসল। শিখতে গেলে শিষ্যত্ব নিতে হবে। ঋষিতার।
মজা করছিস? মনে মনে বলে, শালা সারা জীবন স্ত্রৈণই রয়ে গেল!
মোটেই না। একদিন চলে আয়। শিখিয়ে দেব। মুখে অস্বীকার করলেও এটা মজা ছাড়া কিছুই না। তা মনোজও জানে, জানে ঋদ্ধিও। আসলে কেউ কাউকে কিছু শেখাতে পারে না। শেখানো আর শিখতে চাওয়ার ইচ্ছার অনুপাত যদি সমানুপাতিক হয়, তবেই সমাধান সূত্র বের হয়। বিতর্কে হেরে গিয়েও যে জেতা যায়, এ ধারণা তো ঋষিতাই শিখিয়েছে। কিন্তু নিজের সদিচ্ছাকে মাইনাস কর, ইকুয়াল্টু জিরো। আসলে দুজনেই চেয়েছে সম্পর্কটাকে ধরে রাখতে। তাই রসায়নটার জন্ম। এ রসায়নের একক কোন সূত্র হয় না, হয় না সর্বজনীন প্রয়োগও।
ঋষিতা আজ নেই। সশরীরে। কিন্তু সে তার জীবন থেকে একেবারে বিচ্ছন্ন হয়ে যায় নি। হয় নি, তা আরও একবার প্রমান হয়ে গেল আজ। আজও সে হেরে গিয়ে জিতে এসেছে। সে চাইলেই বিট্টুকে সপাটে একটা ঘুষি কষিয়ে দিতে পারতো। নিদেনপক্ষে একটা চড়ও। সে সামর্থও তার আছে। কিন্তু তারপর? বিট্টুরা কিভাবে রিয়্যাক্ট করত! এখন ভাবতেই শিউরে ওঠে শরীর।
মধ্য-পঞ্চাশের ঋদ্ধিনাথ। পাঁচ বছর হল ঋষিতাও গত হয়েছে। ঈশিতা তো থেকেও নেই। তাই কোন পিছুটান তো তার ছিল না। তবু পারে নি। আর এতেই কি প্রমান হল না ঝগড়া নেই মানে ঋষিতা নেই, এও সম্ভব।
ঋষিতার মূল্যায়ন এভাবেই করে এখন। ভাবে, জীবনের ধর্মও জলের মত। যে পাত্রে যায়, তার আকার ধরে। সময়-পাত্রে এক সময় সবই সয়ে যায়। ঈশিতাকে হারিয়ে যে শুন্যতা, তাও এক সময় সয়ে গিয়েছিল। ভরে দিয়েছিল ওই ঋষিতাই। কিন্তু বাইপাসের ধারে হাজার স্কোয়ার ফুটের ফ্লাটের নির্জনতা যেন কিছুতেই ভরাট হওয়ার নয়। নির্জনতা ক্রমেই শূন্যতায় রুপান্তরিত হচ্ছে। সেই শূন্যতাই আজকাল গিলতে আসছে ওকে। হাঙরের মত।
চাকরী জীবনের শেষ দশকের সুচনাতেই এই শূন্যতার শুরু। ঋদ্ধিনাথ মনে করে এটাই তার জীবনের দ্বিতীয় দুর্ঘটনা। ব্যাথা কমানোর অসুধের ভুল ডোজে জীবন-ঘড়ির কাটার হঠাৎই গতিহীনদশা। ঋষিতা প্রায়ই বলত, তোমার আগেই হয়তো আমি চলে যাব, দেখো। মেয়েটা যদি থাকত, একটু নিশ্চিন্তে মরতে পারতুম।
আজ বড্ড মনে পড়ছে কথাটা। কিভাবে বুঝেছিল ও! একাকিত্বের এমন যন্ত্রনার পূর্বাভাস? চৈতন্যের কোন রেডারে ধরা পড়েছিল এই পশ্চিমী-ঝঞ্ঝা? প্রশ্নগুলোর ভর যেন অনেকটাই বেড়ে গেছে ইদানিং। কার সাথে শেয়ার করবে আজকের যন্ত্রনা? এসব রাশিরাশি প্রশ্নের প্লাবন ঠেলে মাথা তুলছে বিশেষ একটা প্রশ্ন, মেয়েটা যদি থাকত, আজকের ঘটনা কি আদৌ ঘটত?
কি জানি, হয় তো ঘটত না। কিম্বা ঘটতো। ইদানিং একটা মেয়ের সাথে ভারি ভাব হয়েছে ঋদ্ধির। ওর সঙ্গেই চ্যাটিং-এ ব্যস্ত ছিল এতক্ষণ। মেয়েটিও ঋদ্ধির মত একা। বয়স মোটামুটি বাইশ থেকে পঁচিশের মধ্যে। ছিপছিপে চেহারা। গায়ের রং দুধে-আলতা। টিকালো নাক, নাকের বাঁম লতিতে ছোট্ট একদানা তিল। তিলটা দেখলেই ঈশিতার কথা মনে পড়ে যায়। প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হত। ঈশিতাকে হারানোর যন্ত্রনাকে উস্কে দিত তিলটা। তবে এখন আর হয় না। চুটিয়ে গল্প করে দু’জনে। কখনও গুরু-গম্ভির আলোচনায় মেতে ওঠে। নিখাদ বন্ধুর মত। এই বন্ধুত্বই ওদের সম্পর্কের গিট হয়ে উঠেছে। ঋদ্ধির চ্যাটার লিস্টে যে কজন মেয়ের নাম আছে, সবার সাথেই ওর দারুণ ভাব। তবে লিপি একটু অন্য রকম। কেন অন্য রকম, তার ইতিবৃত্ত জানার চেষ্টা করছে ঋদ্ধিনাথ। সবই পরিচয় গোপন করে।
যদিও ইন্টারনেটে পরিচয় গোপন রাখাই রীতি। যারা একাউন্ট খোলে, বিশেষ করে চ্যাটিং-এর জন্যে, সবাই নিক নেম ব্যবহার করে। ঋদ্ধিনাথ বসু তাই ঋদ্ধি৩৬৫। লিপির আড়ালে কে আছে, কে জানে! জানার চেষ্টা, সেই প্রথম থেকেই...
lipi123: hi
riddhi365: fine
lipi123: i am from shiliguri, tell me about you
riddhi365: i am fm kolkata
lipi123: তুমি বাঙালী?
চ্যাট বক্সে হঠাৎ বাংলা শব্দ ফুটে ওঠায় অবাক হয় ঋদ্ধিনাথ। রিপ্লাইতে লেখে
riddhi365: yes, but......
lipi123: চ্যাট বক্সে বাংলা কি করে এল?
খানিক পরেই একটা ইমেল এল। সেটাও বাংলায়। কিভাবে কন্ট্রোল প্যানেলে গিয়ে ‘রিজিওনাল এণ্ড অপশন’ মেনুতে ঢুকে বাংলা লেখার কনফিগারেশন করতে হয় তার বিস্তারিত বিবরণ। সঙ্গে স্টার্ট মেনু থেকে কিভাবে অন-স্ক্রিন-কীবোর্ড এক্টিভ করবে তার বিবরণ, আর কীবোর্ডের লে-আউট। তারপর থেকে বাংলাতেই আড্ডা চলে, লিপির সাথে। ফোনেও কথা হয়। তবে কম।
কী কর তুমি?
কেন, কাজ করি। লিপি তৎক্ষণাত উত্তর পাঠায়।
বেঁচে থাকতে হলে সাবাইকে কিছু না কিছু করতে হয়। সেটা জানার জন্য নিশ্চয় প্রশ্নটা করিনি?
তবে?
জানতে চাই, কী কাজ কর তুমি?
না বললে বন্ধুত্ব রাখবে না?
প্রশ্নের মধ্যে তেমন কোন ইঙ্গিত কি আছে?
জানি না। তবু ভয় করে।
চ্যাট বক্সে কথাগুলো লিখতে গিয়েই গলা ধরে আসে লিপির। মনে মনে ভাবে, সেই ভয়েই তো এড়িয়ে যাই উত্তর। লিপির মনে আছে, বাবা বলতেন মানুষের জীবনে ভাগ্যের কোন ভুমিকা নেই। সুখ-দুঃখ্য কর্মের ফল। সুখ ইকুয়াল্টু ভুল নয়। ভুল ইকুয়াল্টু দুঃখ্য। সে ভুল নিজের হতে পারে, হতে পারে পরেরও। মা মানতেন না কথাটা। এনিয়ে তুমুল বিতর্কও হতে দেখেছে দুজনের। আসলে মানুষ নিয়ন্ত্রন বহির্ভূত কার্যক্রমকে ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেয়। সেটাকেই সে কপাল বলে সান্তনা খোঁজে, কিম্বা অক্ষমতাকে আড়াল করে। বাবার কথাগুলো এখনও কানে বাজে লিপির। ভেবে পায় না, বাবা আর মায়ের কথার মধ্যে বিরোধ কোথায়! সে যে জেদ ধরেছিল, তা তার কপাল? না ছোট্ট ভুল? ছোট্ট কালের এই ভুলটার জন্যই কী এক সময় পরগাছার মত জীবন কেটেছে ওর? না কি কপাল দোষেই মুলগাছটা মরলো আর জীবন হয়ে গেল অবলম্বনহীন আলকলতা? চোখের সামনে ভাঙা ভাঙা ফ্রেমে ঘটনাগুলো এখনও জীবন্ত হয়ে ওঠে মাঝে মাঝে।
ও তখন ক্লাস ওয়ান কিম্বা টু’তে পড়ে। বাবা মায়ের সঙ্গে বই মেলায় এসেছে। সবাই বলে ও নাকি খুব পাকা। কেন ওকে সবাই পাকা বলে? বোঝে না। কিন্তু পরিস্কার মনে আছে, বড়দের মত কথা বলতে, আর কাজ করতে, ওর খুব ভালো লাগত। আশেপাশের সবাই একা একা হাঁটছে দেখে বায়না ধরলো, আমিও একা একা হাতবো।
কোন মতেই সেদিন বাবার হাত ধরে নি লিপি। কিন্তু তখন কি ও জানতো এই জেদই তার কাল হবে? চলতে চলতে হঠাৎ লোকজন ছুটতে শুরু করে। মূহুর্তে পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন ময়দানের আকাশ কালো ধোয়ায় ভরে গেল। আগুন...আগুন চিৎকারে কানে তালা লাগার অবস্থা। তারপর আর মনে নেই। জ্ঞান ফিরলে দেখলো, বাবা মা পালটে গেছে। মা হয়ে গেছে আম্মি, বাবা আব্বা।
সেই শুরু তার বেঁচে ওঠার নতুন লড়াই। ইংলিশে অনার্স পড়ার সময় আব্বা মারা গেল। তার আগেই আম্মিকে হারিয়েছে, ব্রেষ্ট কান্সারে। দু’মুঠো খাওয়া-পরা, আর পড়ার খরচ মেটানোর দায় এখন নিজের কাঁধে। শুরু হলো আর এক লড়াই, নতুন করে পথ-হাঁটা। পড়া শেষ করে একটা চাকরি যোগাড় করতে পারলেই এ হাঁটা শেষ হবে। একাজ তখন ছেড়ে দেবে লিপি।
লিপির কাজ হল, নেট চ্যাটিং-এর মাধ্যমে ক্লায়েন্ট ধরা। এটাই এখন লিপির একমাত্র পেশা। ঋদ্ধি তার বড় মাপের খরিদ্দার হতে যাচ্ছে। লিপি সেভাবেই জাল পেতেছে। একাকিত্বের সুযোগটা সে নেবেই। মাঝিহীন নৌকার মত তার জীবনেও হাল ধরার কেউ নেই। তাই ঋদ্ধিকে তার চাই-ই চাই। কিন্তু কোন রেসপন্স নেই কেন? চিন্তার ভাজ পড়ে কপালে। ‘সাইন আউট’ তো করে নি! তবে? উত্তর দিচ্ছে না কেন? আজই একটা ডেট পাবার কথা, অন্ততঃ তেমন আশাই করেছিল লিপি। তাই অস্থির হয়ে ওঠে মন। ঠিক তখনই হাতের মুঠোয় কেঁপে ওঠে থ্রি জি মোবাইল। ডিস্প্লে-স্ক্রিনে চোখ রাখতেই উজ্জ্বল হয় চোখ দুটো। ঋদ্ধি কলিং......। কানে নিয়ে রিসিভ বাটন প্রেস করতেই ভরাট গলায় কানটা ভরে ওঠে।
ঋদ্ধি বলছি,
হ্যাঁ শুনছি। তুমি কি নেট ছেড়ে উঠে পড়েছ?
উত্তর করে না ঋদ্ধি। শুধু বলে, তুমি শনিবার আসতে পার?
আসবো! ভেতরের বুকটা যেন লাফিয়ে ওঠে লিপির। ঋদ্ধি অন্য প্রান্তে থেকেই উপলব্ধি করে সেই লাফিয়ে ওঠার উচ্চতা।
এসো। তবে, ভেবে দেখ, দেখার পর বন্ধুত্ব রাখার ইচ্ছা থাকবে তো?
দেখই না। তাছাড়া, বন্ধুত্বের মূলধন ঠিক থাকলে দেখার সঙ্গে তার সম্পর্কের কোন টানাপোড়েন তৈরি হয় না।
ঠিক তাই। ঋদ্ধিও সমর্থন করে। বলে, পৌছানোর গাইড লাইন এস.এম.এস-এ পৌছে যাবে; সময় মত।
কথা রেখেছিল ঋদ্ধি। লিপিও কথা রাখতে ছুটে এসেছে। শিয়ালদা ষ্টেশনে। ও এখন ওয়েটিং রুমে ওয়েট করছে। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে ছোটার অভ্যাস ওর নেই। কিন্তু আজ বড় ইচ্ছা করছে। ইচ্ছা করছে ছুট্টে গিয়ে ঋদ্ধিকে জড়িয়ে ধরে। এখনই। সিনেমার সব-হারা কোন দুঃখি নায়িকার মত। কিন্তু কোথায় ঋদ্ধি? দেখছি না তো। তবে কি ও আসে নি? শনিবারে মানুষের চাপ কমই থাকে। কিন্তু আজ তার ব্যতিক্রম মনে হচ্ছে। এত লোকের মধ্যে ওকে চেনা যাবে! এমন হোচ্ছে না তো, দুজনেই দুজনকে খুঁজে বেড়াছে? অস্থিরতার পারদ তাই ক্রমশঃ চড়তে থাকে। ফোনটাও বন্ধ। কী যে করে না? চোখ-মুখের চাহনিতে আভিমান ঝরে পড়ছে। যদিও আগে এমন হয় নি কোনদিন। হঠাৎ আজ কেন এই আবেগ! তারও কোন জুতসই ব্যাখা নেই লিপির কাছে। এক-একবার মনে হচ্ছে ফিরে যাবে।
হ্যালো, আপনি কি কাউকে খুঁজছেন?
হ্যাঁ ..., মানে ঋদ্ধি...
ঋদ্ধি৩৬৫, তাই তো?
হ্যা, ....কিন্তু...
কোন কিন্তু নেই। দ্রুত চলুন। বাইরে গাড়ী অপেক্ষা করছে।
ঋদ্ধি এলো না? লিপির কৌতুহলি প্রশ্ন। গলার স্বরে স্পষ্ট অভিমান।
উনি জরুরি কাজে অফিসে আটকে আছেন। ঘন্টা দু’য়েকের মধ্যে চলে আসবেন। এই যে, ওনার ফ্লাটের চাবি।
এবার বেশ ঘাবড়ে যায় লিপি। জাল পাততে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যাছে না তো! দুঃশ্চিন্তা মাথাটাকে কুমোরের চাকের মত ঘুরিয়ে দেয়। কিন্তু ফেরারও তো রাস্তা নেই।
লিপি এখন গাড়িতে। চলছে দুরন্ত গতিতে। পাকসার্কাস কানেক্টার হয়ে বাইপাসের উদ্দ্যেশে। শীতের কপালেও বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে যায় লিপির।
ম্যাডাম, ঘাবড়াবার কারন নেই। আপনি ঠিকঠাকই যাচ্ছেন। বাবু সময় মত পৌছে যাবেন।
লিপি মনে জোর আনার চেষ্টা করে। তাছাড়া এ লাইনে তো ও নতুন না। সেকারনেই সাহসটা দ্রুত ফিরে আসে।
না না, ঘাবড়ানোর কি আছে। ঋদ্ধি আমার সব চেয়ে ভালো চ্যাট-ফ্রেন্ড। পরিচয়ও অনেকদিনের। শুধু সামনা সামনি দেখা হয় নি, এই যা। মনে মনে ভাবে, ঋদ্ধিও নিশ্চয় আমাকে ভালো বন্ধু ভাবে। না হলে কোন্ বিশ্বাসে ঘরের চাবি পাঠাবে!
বিশ্বাস সত্যিই করে ঋদ্ধি। লিপির সাথে কথা বলে কোন দিন মনে হয় নি, ওকে অবিশ্বাস করা উচিৎ। গুরুদেব বলেছিলেন, মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ। কিন্তু আজ কেন জানি না, মনের ভেতরটা খচ্ খচ্ করছে। তাই ঋদ্ধি নাথ এখন আড়ালে। একটু যাচাই করা খুব দরকার। কেননা, মানুষের প্রতি অন্ধবিশ্বাস করা যে মহাপাপ!
তবে হ্যাঁ, পাপ-পুন্যের হিসাব লিপি করে না। বন্ধুত্বের সম্পর্ককে যেকোন দিকে ঘোরাতে ওর কোন আপত্তি নেই। লিপির আম্মা বলতেন, জীবন বাঁচানো ফরজ। তাই তো সেদিন নিজের জীবন বাজি রেখে লিপিকে বাঁচিয়ে ছিল। মেলার ষষ্ঠ দিনের অপরাহ্নে, হঠাৎ-ই খাবারের দোকানে আগুন লেগে গেল। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ল মেলাময়। প্রচন্ড হুড়োহুড়ির মধ্যেই দু’পায়ের মাঝখান থেকে তুলে নিয়েছিল লিপিকে।
রহিমা নিজে নিঃসন্তান। তাই সুযোগটা হাতছাড়া করে নি। একই সাথে দুটো, জীবন বাঁচিয়ে পুন্য, আর তাকে নিয়ে পালিয়ে এসে পাপ করেছিল রহিমা। লিপির মতে, পরের মত নিজের জীবন বাঁচানোও ফরজ। তাই আম্মার মত সেও কোন পাপ করছে না। সেকারনেই পাপকে সে পরোয়া করে না, করে না জীবনের চাহিদাকে উপেক্ষাও? সব কিছুর জন্যেই সে আজ তৈরি।
কিন্তু ঋদ্ধির কী হল? দু’ঘন্টা পার হয়ে গেল! এখনো ফিরছে না! ভাবনার সাথে সাথে লিপির চোখ দুটো ঘুরপাক খাচ্ছে ঘরময়। ঋদ্ধির বেডরুম থেকে টয়লেট মায় ব্যালকোনির আনাচ-কানাচ। এগুলোর ডেকরেশন থেকে বোঝার চেষ্টা করছে ঋদ্ধির রুচিবোধ। কি ভালোবাসে, কেমন মানুষ সে? সংসারের অগোছালো চেহারা বলছে, সে একা। দামি মার্বেলের মেঝে, আর কাঠের ওয়াড্রোব ছাড়া অন্য আসবাবগুলোর আধিকাংশই স্টিলের। দেওয়াল জুড়ে রয়েছে চোখ জুড়ানো ওয়াল পেন্টিং।
ঘরে ঢুকতেই একটা আলাদা আবহাওয়ার গন্ধ পায় লিপি। নির্জন ফ্লাট-জুড়ে মদিরার ম ম গন্ধ। এমন নির্জনতার গোপন গন্ধ মনকে বল্গাহীন করে দেয়। ন্যায্যতার আবরন ছিড়ে বেরিয়ে আসে ভিতরের ভিক্ষুটা। চৈত্রের মাটির টানে যেমন আকাশ ভাঙে, তৃষ্ণার্ত মাটির বুকে, তারপর ভিজিয়ে দেয় মাটি, আলগা হয় ভিতরের জমিন, লিপির ভেতরের আকাশটাও তেমনি ভেঙেছে, গত সপ্তাহে। ভিক্ষুটাকে ভিজিয়ে দিয়েছে, আলগা হয়েছে ওর মানব জমিন। প্রয়োজন এখন একজন বর্গাদার। ঋদ্ধিনাথ কি পারে না এ দায়িত্ব নিতে? পারে। নিশ্চয় পারে। ওকে পারতেই হবে। নইলে কিসের বন্ধু ও। কিসের টানে গড়েছে এই সম্পর্ক?
হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজে ভাবনার সুতো কেটে যায় লিপির। বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। ধীর পায়ে এগিয়ে যায়, দরজায়। লক খুলতেই হতবাক হয় দু’জনেই। কাকে দেখছে লিপি? এ তো ঋদ্ধি নয়! আর ঋদ্ধি? ঋদ্ধি দেখছে লিপিকে। এক অসাধারন শিল্পকর্মের মত মূর্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সামনে। যেন অশ্লীল হয়ে ওঠার ভয়ে, শিল্পী তার শরীরের কোথাও এক টুকরো সুতো রাখে নি।
পরদিন, ঋদ্ধির ঘরে পাওয়া গেল একটুকরো কাগজ। যাতে লেখা, এখানকার সব কিছুই তোমার। আমি না ফেরা পর্যন্ত বাড়ি ছেড়ে যেও না। কারণ, আমি কোন কিছু আর দ্বিতীয়বার হারাতে চাই না।
লিপি এখনও জানে না, সে আসলে ঈশিতা। আর দু’বুকের মাঝ-বরাবর ঠিক নিচে, ছোট্ট বেলায় ফোড়াটা যে কেটে দিয়েছিল, সে এই ঋদ্ধি - ওর বাবা। ঋদ্ধি দেখেছে, সেলাই না দেওয়া জায়গাটা গতকালও ফুলে ফুলে উঠছিল; নিশ্বাস-প্রশ্বাসের তালে তালে, বৃত্তাকারে।
-----------*********--------



29 ডিসেম্বর 2009, 10.48.37
Ali Hossain Mondal
Sampriti Appt.
Flat No. 3,
2002 Brahmapur, Badamtala,
Opp: Niva park (Ph-I),
Kolkata 700096
Phone : 9432983876
Email: ali_hossain_mondal@yahoo.com
Email: nehacomputeraids@gmail.com

Comments

Popular Posts